সংবাদাতা সুজয় সরকার ,জলপাইগুড়ি:পুলিশের নজরদারি উঠতেই ফের ব্রাউন সুগার সহ একাধিক নেশ জাতীয় দ্রব্য বিক্রি শুরু হয়ে গেলো জলপাইগুড়ি শহরের টাউন স্টেশন এলাকায়। আবার স্পোর্টস কমপ্লেক্সের সংলগ্ন করলা নদির অ্যালি, রাজবাড়ী পার্ক সহ শহরের একাধিক জায়গায় রাতের অন্ধকারে নতুন করে নেশার আসর বসান হচ্ছে বলে অভিযোগ। শহরের বাসিন্দা সহ তৃনমুল যুব কংগ্রেসের অভিযোগ জলপাইগুড়ি শহরের সংস্কৃতি এটা ছিল না। বর্তমান পরিস্থিতি যা দাঁড়াচ্ছে তাতে যারা এই নেশার দ্রব্যের মূল কারবারি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আগামীতে এই শহর, নেশার শহরে পরিনত হতে খুব বেশি দেরি নেই বলেই মনে করছেন অনেকেই। তবে এই ঘটনা জন্য পুলিশের ঢিলেঢালা মনোভাব কেই দায়ি করেছেন তারা।
জলপাইগুড়ি শহরের টাউন স্টেশন, জয়ন্তী পাড়া এলাকায় অবাধে চলছে নেশার কারবার। মদ গাঁজা, ইয়াবা থেকে শুরু করে নেশার ওষুধ এমনকি ব্রাউন সুগার পর্যন্ত বিক্রি করা হয়ে থাকে লোক চক্ষুর আড়ালে। এই অভিযোগ শহরবাসির বহুদিনের। যা একাধিক বার পুলিশি অভিযানে প্রমানিতও হয়েছে। চলতি মাসের ৩ তারিখ রাতে স্টেশন রোড এলাকায় কিশোর দাস নামে সরকারি কর্মী কে খুন করা হয়। অভিযুক্তরা সেই সময় নেশা গ্রস্থ ছিলো বলেও অভিযোগ। ওই ঘটনা প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছিল কোতয়ালী থানার পুলিশ কে। যদিও অভিযুক্ত তিন যুবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সেই সাথে এলাকায় লাগাতার নজরদারি চালান হতে থাকে পুলিশের পক্ষ থেকে। সুত্রে পাওয়া খবরে জানা গেছে গত তিন দিন আগে এলাকায় সেই ভাবে পুলিশ নজরদারি দেখা যাচ্ছে না। আর এরই সুযোগ নিয়ে সক্রিয় হয়েছে নেশার কারবারিরা।
বিশেষ সুত্রে জানা গেছে এলাকার দুই থেকে তিন জন ব্রাউন সুগার, ইয়াবা, থেকে শুরু করে প্রায় সমস্ত রকমের নেশার দ্রব্যের ডিলার হিসেবে কারবার করে। আবার এদের অধিনে ৭ থেকে ৮ জন আছে, যারা ডিলারদের থেকে মাল নিয়ে খুচরো বিক্রি করে। জানা গেছে মুলত দুটি রুট দিয়ে ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রামের ব্রাউন সুগারের প্যাকেট নিয়ে আসা হয় এই শহরে। যআর মধ্যে একটি ভুটান থেকে জয়গাঁ হয়ে আলিপুরদুয়ার ধুপগুড়ি হয়ে ব্রাউন সুগার জলপাইগুড়িতে। অন্যটি নামচি ভুটান রুট দিয়ে। জলপাইগুড়ি শহরে নিয়ে আসার পরে স্টেশন রোডের কোন এক বাড়িতে ওই প্যাকেট খুলে নতুন করে ৫ গ্রাম করে প্যাকেট তৈরি করা হয় থাকে। যা নেশার কারবারি বা নেশা গ্রস্থ খোরদের কাছে চকলেট, পাতা, বি এস বলে কোড নামে ৫০০ টাকা করে বিক্রি করা হয়।
এদিন জলপাইগুড়ি শহরের বাসিন্দা বিবেক রায়, রতন সরকার, কাবেরী কুন্ডুরা বলেন, কোন ঘটনা ঘটলেই পুলিশের তৎপরতা চোখে পরে। যা দেখা গিয়েছে গত ৩ তারিখের ঘটনার পরে। এখন ওই এলাকায় পুলিশি তৎপরতা সেই ভাবে নেই। যে কারনে ফের সক্রিয় হয়েছে নেশার কারবারিরা। এক্ষেত্রে তারা পুলিশের গাফিলতিকেই দায়ি করছে। তাদের বক্তব্য ৩ তারিখের ঘটনার পরে পুলিশ কয়েক জন কে গ্রেপ্তার করলেও মূল কারবারিদের দিকে তাদের নজর নেই বলে অভিযোগ করেন তারা। অন্যদিকে জেলা যুব তৃনমূল কংগ্রেসের সাধারন সম্পাদক অজয় শা বলেন তার বাড়ি স্টেশন রোডের ওপরে হওয়ায় তারাও এই অসুবিধার সম্মুখীন হন। সন্ধ্যার পরেই স্টেশন রোড নেশাখোরদের আঁখড়ায় পরিনত হয়। যারা এই কারবারের মূলপান্ডা তাদের ধরে শাস্তি প্রদান করলেই জলপাইগুড়ি শহরে এই নেশা কারবারিদের চক্র নির্মুল করা যেতে পারে। তিনি আরো বলেন সন্ধ্যার পরেই শহরের বিভিন্ন স্টেশন রোড, করলা নদির অ্যালি, রাজবাড়ি দিঘি সহ বিভিন্ন জায়গায় বসছে নেশার আসর, সুতরাং ভাবতে হচ্ছে এই শহর আগামীতে কোন দিকে যাচ্ছে। এর আগে সংগঠনের জেলা সভাপতি সৈকত চ্যাটার্জীর নেতৃত্বে নেশার বিরুদ্ধে সচেতনতা অভিযান চালান হয়েছিল। যার এখন অব্যহত আছে। তবে পুলিশ কে আরো সচেতন হতে হবে বলেই মনে করেন তিনি।
0 মন্তব্য(গুলি):
Please do not enter any spam link in the comment box